এক দশকের বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। তবে এখনো পায়ের নিচে শক্ত মাটি খুঁজে পায়নি দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় এই টুর্নামেন্ট। প্রায় সব আসর শুরু হওয়ার আগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে বিতর্ক। কখনো ফিক্সিং কেলেঙ্কারি কখনো বা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর অনিয়ম।

নতুন বোর্ডের অধীনে সবকিছু নতুন করে শুরু করতে চায় বিসিবি। লাগাম টানতে চায় সকল ফিক্সিং ও অনিয়মের। সেই লক্ষ্যে আইসিসির সাবেক দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তা অ্যালেক্স মার্শাল এখন বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের প্রধান। বিপিএলকে কলঙ্কমুক্ত এবং সব অনিয়মের লাগাম টানতে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

গেল মাসে বিসিবির স্বাধীন তদন্ত কমিটি ৯০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর মধ্যে ৬০ জন হয় অভিযুক্ত না হয় সন্দেহভাজন। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কাজ করছেন তিনি। প্রথম ধাপে আসন্ন বিপিএলের নিলাম থেকে ৯ জন ক্রিকেটারের নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের লক্ষ্য ছিল, ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজনদের বিপিএল থেকে সরিয়ে রাখা। যে তালিকায় আছেন এনামুল হক বিজয়, মোসাদ্দেক হোসেন, শফিউল ইসলাম, সানজামুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান, আলাউদ্দিন বাবু, আরিফুল হক ও নিহাদুজ্জামান। 

যদিও বিসিবির তরফ থেকে একাধিক বার জানানো হয়েছে, তালিকায় থাকা ক্রিকেটাররা ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিপিএলের মান ধরে রাখতে মার্শালের পরামর্শে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে এবারের বিপিএলে মেনে চলা হবে জিরো টলারেন্স নীতি। নিয়ম না মানলে তিনি যে-ই হোন না কেন, বাদ দিয়ে দিতে পিছপা হবে না দুর্নীতি দমন ইউনিট। 

এই নিয়ে মার্শাল বলেন, 'আপনি যতই খ্যাতিমান বা ক্ষমতাধর হোন না কেন, এখন নিয়ম ভাঙলেই তার এক্রিডিটেশন বাতিল করা হবে এবং বিপিএলের বাকি অংশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। কঠোরভাবে এটা প্রয়োগ করা হবে। সবাই এন্টিকরাপশন কোড দেখে নেবেন ভালো করে।'

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মার্শাল বিপিএলের মান নিয়ে বলেন, 'বিপিএল বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ফ্যাঞ্চাইজি লিগ হওয়া উচিৎ। সেরা ক্রিকেটারদের বিপিএলে আকৃষ্ট করা দরকার। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দেরও উন্নত করা উচিত, যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে খেলবে। আমার ভাবনা এমনটাই। আমি যখন কাজ করি, অনুভব করি বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের জন্য কাজ করছি। তারাই আমার কাস্টমার। যারা উঁচু মানের, স্বচ্ছ টুর্নামেন্ট চান।' 

এছাড়ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপিএলের সবশেষ দুই আসরে খেলা চলাকালীন সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন ক্রিকেটাররা। এই নিয়ে অ্যালেক্স মার্শাল বলেন, 'খেলা চলাকালে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কোনো নিয়ম নেই। কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম, যেমন ডাক্তারের মেডিক্যাল ইমারজেন্সির জন্য লাগবে, মিডিয়া ম্যানেজারের লাগবে, টিম ম্যানেজারের লাগতে পারে, তবে সেসব সামাজিক যোগাযোগের জন্য নয়। কিন্তু আমরা দেখেছি, অতীতে এসব নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে। ভেতরে-বাইরে যোগাযোগ হতো। এতে অবৈধ কাজে ভেতরের তথ্যাদি ব্যবহৃত হতে পারে।'

সেইসঙ্গে তদন্তে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা বজায় রেখে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মার্শাল। বলেন, 'পেশাদারিত্ব এবং গোপনীয়তাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। অতীতে দেখা গেছে, সন্দেহভাজনদের সঙ্গে কী কথা হচ্ছে, সব গণমাধ্যমে চলে আসত। সাংবাদিকরা তো এসব খবর বের করতে চাইবেই। তবে আমার জন্য এসব ভীষণ গোপন। এবং নতুন ইউনিট প্রথম কয়েক সপ্তাহে সব কিছু দারুণভাবে করেছে, গণমাধ্যমের সংস্পর্শে আসেনি কিছুই।'



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews