ইসলাম মানুষের সর্বক্ষেত্রে পরিব্যাপ্ত, ব্যক্তিজীবন থেকে নিয়ে পারিবারিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন- সর্বক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা রয়েছে। একজন ইমামকে যেমনিভাবে নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে, তেমনিভাবে সুদ, ঘুস, দুর্নীতি, চুরি, ডাকাতি ও চাঁদাবাজি ইত্যাদি সামাজিক অপরাধ সম্পর্কে এবং একই সঙ্গে দ্বীন প্রতিষ্ঠা অর্থ্যাৎ আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ পরিচালনার জন্য জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। তবে এ দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে গিয়ে ইমামরা বাধাগ্রস্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে সব বাধা উপেক্ষা করে সৎসাহসিকতার পরিচয় দিতে হবে। বাধা আসার ভয়ে শরিয়তের কিছু অংশ প্রকাশ করা, কিছু অংশ গোপন করার অবকাশ নেই। 

রোববার নাজিরপুর আলিয়া মাদরাসা চত্ত্বরে সরকারি কর্মক্ষেত্রে কওমি সনদের মূল্যায়ন ও ইমাম মুয়াজ্জিনদের সরকারিভাবে সম্মানি ভাতা প্রদানের দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি, নাজিরপুর উপজেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত ইমাম সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী এসব কথা বলেন।

মাসুদ সাঈদী বলেন, মনে রাখতে হবে, নবীরাও দ্বীনের বাণী প্রচার করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। তাই বলে তারা রিসালাতের কাজ ছেড়ে দেননি। নবীদের সেই দায়িত্ব এখন ওলামায়ে কেরামের ওপর ন্যস্ত। তাই বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে এ দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে হবে।

তিনি বলেন, ইসলামের সোনালী যুগে সমাজ, রাষ্ট্র পরিচালিত হতো মসজিদকে কেন্দ্র করে। বিচারকার্য পরিচালনা করা হতো মসজিদে। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার জ্ঞান বিতরণ করা হতো মসজিদ থেকেই। সেই ইতিহাস আমরা ভুলে গেছি। মসজিদকে আমরা ধর্মীয় একটি স্থান ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারি না। ইসলামকে আমরা শুধুমাত্র কিছু ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছি। ওলামা হজরতদেরকে ইসলামের সোনালী যুগের সেই ইতিহাসকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।

ইমাম সমাবেশে মাসুদ সাঈদী আরও বলেন, মসজিদের ইমামরা যেমন জাতির আমলগত সংস্কারের জিম্মাদার, তেমনি আক্বিদাগত সংস্কার ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করারও পুরোপুরি দায়িত্বশীল। বাতিল আক্বিদা ও মতবাদকে খণ্ডন করা এবং ভ্রান্ত চিন্তাধারার মূলোৎপাটন করা তাদের প্রধান দায়িত্ব। যদি আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ পরিপন্থি কোনো আওয়াজ উঠে অথবা রাসুল (সা.)-এর রিসালাতের অবমাননা করা হয়, তাহলে এই ধরনের ভ্রান্ত চিন্তাধারা সম্পর্কে জাতিকে অবগত করা ইমামদের কর্তব্য।

তিনি বলেন, দেশে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মসজিদ আছে। এর মধ্যে কয়েকটি মসজিদ ছাড়া বাকিগুলো বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়ে থাকে। এসব মসজিদ কমিটি অনেক সময় ইমাম-খতিবদের প্রতি ন্যায়বিচার করে না। তাই ইমাম-খতিবদের স্বার্থ ও সম্মান সমুন্নত রাখার জন্য মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা যুগোপযোগী করতে হবে।

মাসুদ সাঈদী বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে আল্লাহর দয়ায় জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানি ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে ইমামদের জন্য রাষ্ট্রীয় সার্ভিস রুল প্রণয়ন করে তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে, ইনশাআল্লাহ।

বাংলাদেশ ইমাম সমিতির নাজিরপুর উপজেলা সভাপতি মাওলানা হাবিবুল্লাহ বেলালীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা আবু দাউদের সঞ্চালনায় ইমাম সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলার সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক শেখ, জামায়াতে ইসলামী নাজিরপুর উপজেলা আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নাজিরপুর উপজেলা সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফিরোজীসহ ইমাম সমিতির বিভিন্ন ইউনিয়ন সভাপতি ও অন্যান্য নেতারা। এ সময় নাজিরপুর উপজেলার প্রায় সব মসজিদের ইমামরা উপস্থিত ছিলেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews