(৪৬ মিনিট আগে) ১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১:১৪ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১:১৬ অপরাহ্ন

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনই সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন রূপ পায় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জন-আন্দোলনে। বহু মানুষের ত্যাগের এই আন্দোলন পরিবর্তন বা সংস্কারের ব্যাপক প্রত্যাশা তৈরি করেছে মানুষের মনে। অতীতের ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচারের ভয় থেকে মানুষ নতুন কিছু চাওয়া নিয়ে আশায় বুক বাঁধে। আন্দোলনে টানা ১৬ বছরের সরকারের পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন বিজয়ীরা দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি এঁকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন গণ-মানুষের সেই প্রত্যাশার চিত্র। ৮ই আগস্ট দুনিয়াজোড়া খ্যাতিমান ড. ইউনূসকে যখন সরকার প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয় তখন মানুষের এই প্রত্যাশা আরও দৃঢ় হতে শুরু করে। মানুষের এই প্রত্যাশার চাপ কাঁধে নিয়েই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। একে একে গঠন করা হয় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ১১টি সংস্কার কমিশন। গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ জমা দেয়ার পর এই সুপারিশের উপর রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণও প্রায় শেষ পর্যায়ে। কমিশনের সুপারিশ এবং দলগুলোর মতামতের মধ্যে নানা ধরনের ভিন্নতা এসেছে। একই সঙ্গে দলগুলোর জমা দেয়া মতামতেও ভিন্নমত এসেছে নানা ইস্যুতে।  কোনো কোনো ইস্যুতে একেবারে পাল্টাপাল্টি দিয়েছে দলগুলো। এই মতভিন্নতা দূর করতে কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইতিমধ্যে মতামত জমা দেয়া দলগুলোর সঙ্গে কমিশন আলোচনা শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রথম ধাপের আলোচনা শেষ করতে চায় কমিশন। আলোচনা হলেও দলগুলোর মতের ভিন্নতা দূর করতে কমিশন কতোটা সফল হবে এই প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে। অনেকে বলছেন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজস্ব যে মতামত দিয়েছে তা নিয়ে এক জায়গায় আসা দুরূহ। কারণ দলগুলো নিজস্ব রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই মতামত দিয়েছে। এতে দলীয় স্বার্থ রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর দলগুলো জনপ্রত্যাশার চাপ বা আবেগ থেকে হলেও সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য পোষণ করেছিল। অনেক ক্ষেত্রে কাছাকাছি মনোভাব  দেখিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতা ও ভোটের রাজনীতির হিসাব থেকে এখন দলীয় চিন্তার ফারাক ক্রমে স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতসহ বিদ্যমান দলগুলো সংস্কার প্রস্তাবে যেসব মতামত দিয়েছে তার অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থান নিয়েছে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। সামনে ভোটের মাঠে নবগঠিত দলটি বড় হিস্যা তৈরি করতে চাইছে। এজন্য নানাভাবে তৎপর তারা।  সংবিধান সংস্কার কমিশন যেসব মতামত দিয়েছে দলটি তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। তবে তারা নতুন করে সংবিধান প্রণয়নের পক্ষে। এজন্য গণপরিষদ নির্বাচন দাবি করছে দলটি। তাদের এই গণপরিষদ দাবির সঙ্গে একমত নয় বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল।

সংবিধান, বিচারবিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও পুলিশ সংস্কারে গঠিত কমিশনের সুপারিশের উপর দলগুলো যে মতামত দিয়েছে তার মধ্যে মোটা দাগে সংবিধান সংস্কার বিষয়ে বড় ধরনের মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। এই ভিন্নতা দূর করা খুব একটা সহজ নয় বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাওয়ায় তারা এখন একে অন্যকে কোনো ধরনের ছাড় দিতে চাইবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ- সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলে আসছেন, দলগুলোর মধ্যে মতের অমিলগুলো দূর করতে তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা দলগুলোকে বুঝানোর চেষ্টা করছেন। অন্তত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে ঐকমত্য হলে একটা জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে। যে সনদের উপর ভিত্তি করে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে। নবগঠিত এনসিপি বা শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফরম জুলাই সনদ নামে যে সনদ দাবি করে আসছে ঐকমত্যের সনদ এই জুলাই সনদ হিসেবে আইনি কোনো ভিত্তির উপর দাঁড় করানোর চিন্তাও আছে সরকারের।  

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্র’ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে। এ ব্যাপারে কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ একটি বহুত্ববাদী, বহুজাতি, বহুধর্মী, বহুভাষী ও বহু সংস্কৃতির দেশ, যেখানে সব সমপ্রদায়ের সহাবস্থান ও যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।

কমিশনের এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয় দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। সংবিধানের ৮, ৯, ১০ ও ১২ অনুচ্ছেদ পঞ্চদশ সংশোধনীর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছে তারা। সংবিধানের ৮ অনুচ্ছেদে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। আর অনুচ্ছেদ ৯, ১০, ও ১২-এ জাতীয়তাবাদ, সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। দলটির এই অবস্থানের কারণে কেউ কেউ আবার প্রশ্ন তুলছেন তাহলে বিএনপি কী ধর্মনিরপেক্ষতায় ফিরে যেতে চায়? এক্ষেত্রে বিএনপি নেতারা বলছেন, দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ  প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে আনা সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের কথা সংযোজন করা হয়েছিল। বিএনপি এই পঞ্চম সংশোধনীর ধারা ফিরিয়ে আনতে চায়। বিএনপি স্পষ্ট করেই বলেছে, তারা ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের বিপক্ষে। 
অন্য অনেক বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও এই বহুত্ববাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জামায়াতে ইসলামীও। জামায়াত সংবিধান সংস্কারে সরকার গঠিত কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে প্রায় সব বিষয়ে একমত পোষণ করেছে।

তারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, ধর্মীয় এবং সামাজিক মূল্যবোধ, এই শব্দগুলো যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে।

এনসিপি সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি থেকে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র’ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। সংবিধান সংস্কার কমিশন রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের যে সুপারিশ করেছে, এতে আপত্তি জানিয়েছে দলটি।

‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’-এর পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ ও ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দগুলো ব্যবহারের সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য দলগুলোও রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন চায় না। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম মত দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির প্রস্তাবে পিপল ওয়েলফেয়ার স্টেট বা ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ করার কথা বলা হয়েছে। 

ওদিকে নবগঠিত দল এনসিপি বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান চাইছে। সেজন্য তারা গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। দলটির ব্যাখ্যা হচ্ছে, নির্বাচন একবারই হবে। সেই নির্বাচনে যারা জয়ী হবে, তারা প্রথমে গণপরিষদ গঠন করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে। এই নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই পরে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের নিয়েই হবে নতুন সংসদ। এনসিপি’র এই দাবির সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতসহ বেশির ভাগ দলই দ্বিমত প্রকাশ করেছে। এনসিপি’র এই দাবির সঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদেরও অনেকে একমত নন। সংস্কার কমিশন সরকারের মেয়াদ চার বছর করার যে সুপারিশ করেছে এতেও প্রায় সব দলেরই সায় নেই। তারা বিদ্যমান পাঁচ বছর মেয়াদের কোনো পরিবর্তন চায় না। একই ব্যক্তি একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না বলে সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব করেছে এতে অনেক ছোট দল সমর্থন দিয়েছে। 

কমিশনের এই প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। এটি দলগুলোর সিদ্ধান্তের বিষয় বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। জামায়াতের মত, সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী এক ব্যক্তি হতে পারেন তবে তিনি দলীয় প্রধান হতে পারবেন না।

জাতীয় সংসদকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার যে প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন সেখানে দলগুলোর খুব একটা ভিন্নমত নেই। শুধু উচ্চ কক্ষ গঠন এবং নারী আসন নিয়ে কোনো কোনো দল প্রশ্ন তুলেছে। বিগত সময়ে বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা নাগরিক ঐক্য অবশ্য দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদেরও বিরোধিতা করে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। দলটির যুক্তি দেশে যেহেতু ফেডারেল সরকার নেই তাই সংসদের দুটি কক্ষ থাকার প্রয়োজন নেই।


এ বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে বলা হচ্ছে, সংসদের নিম্নকক্ষে আসন থাকবে ৪০০, নির্বাচন হবে বর্তমান পদ্ধতিতে। এর মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তারা নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে। আর উচ্চকক্ষে আসন থাকবে ১০৫টি। নির্বাচন হবে আনুপাতিক পদ্ধতিতে। সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট আসন হবে ৫০৫টি। ওদিকে সংখ্যানুপাতিক ভোটে এমপি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে কিছু দল। তার সঙ্গে একমত নয় বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল। এমপিদের ভোটের ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতে আপত্তি তুলেছে অনেক দল। কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অর্থবিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।

বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন না। তাতে এ-ও বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তার আসন শূন্য হবে। এ বিষয়ে কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতে একমত হয়নি বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, নাগরিক ঐক্যসহ অনেক দল।

জাতীয় সাংবিধানিক কমিশন গঠনে সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতেও আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, গণসংহতি আন্দোলনসহ অনেক দল। সংস্কার কমিশন জাতীয় সাংবিধানিক কমিশনের (এনসিসি) সিদ্ধান্তক্রমে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন বলে সুপারিশ করেছে। বিএনপি এই প্রস্তাবে আপত্তি তুলে বলছে, জরুরি অবস্থা জারির সঙ্গে সরকারের নির্বাহী কর্তৃত্বের বিষয়টি সম্পর্কিত, এ ক্ষমতা সরকার ও সংসদের বাইরে অন্য কারও কাছে থাকা ঠিক নয়।

মোটা দাগে এসব বিষয় ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর জমা দেয়া প্রস্তাব এবং সুপারিশের সঙ্গে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় অনেক ফারাক দেখা যাচ্ছে। এই দূরত্ব দূর করে দলগুলোকে কাছাকাছি আনা এবং জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়নই এখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কমিশন এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করলেও রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে নির্বাচন। নিজেদের নির্বাচনী সুবিধা বিবেচনায় কিছু দল দ্রুতই নির্বাচন চাইছে আবার কিছু দল সময়ক্ষেপণের কৌশল নিয়েছে। দলগুলোর মধ্যে সংস্কার নিয়েও এমন দুটি ধারা বিদ্যমান। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো অতি জরুরি সংস্কারগুলো করে নির্বাচনের পক্ষে। তারা এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই একটি নির্বাচন আয়োজনকে যৌক্তিক মনে করছে। দলটির নেতারা বলছেন, একটি অনির্বাচিত সরকার বেশিদিন থাকা উচিত নয়। রাষ্ট্র সংস্কারে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করতে হবে। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার সেরে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে সরকার।

তবে জামায়াত ও এনসিপিসহ কিছু দল সংস্কারে সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দেয়ার পক্ষে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যে প্রেক্ষাপট ছিল তা এখন বদলে যাচ্ছে। রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় নিয়েই দলগুলো তাদের কৌশল ঠিক করছে। এ কারণে রাজনীতির মাঠে পুরনো অনেক চিত্র ফিরে আসতে শুরু করেছে। পতিত আওয়ামী লীগ রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে এমন তথ্যও দিচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ অবস্থায় রাষ্ট্র সংস্কারে দলগুলোর মধ্যে পুরো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচন আয়োজনে সরকারের চিন্তা কতোটা সফল হবে তা নিয়ে সংশয় দিন দিন বাড়ছে। অনেকে বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার সময়ে দেশের যে টালমাটাল পরিস্থিতি ছিল তা এখন আর নেই। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। অনেক ক্ষেত্রে সাফল্য আসায় মানুষও সরকারের প্রতি সমর্থন দিচ্ছে। হতাশা কাটিয়ে আশাবাদী হচ্ছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর নানা কর্মকাণ্ড মানুষকে অতীত নানা স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। এই অবস্থায় সামনে সরকারের জনপ্রিয়তা ও অবস্থানও নির্বাচনের সময় এবং সংস্কারের গতিপথ ঠিক করে দিতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। 

সূত্র: জনতার চোখ



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews