॥ ড. বি এম শহীদুল ইসলাম ॥

মিথ্যাকে আঁকড়ে ধরে কেউ সাময়িক জয়লাভ করলেও তা স্থায়ী সর্বনাশের কারণ। মিথ্যার মাধ্যমে কাউকে ঠকিয়ে দেয়া যায়, অসম্মানের উপাদান হাজির করা যায় অথবা ব্যক্তি পরিবার ও একটি সমাজকে ধ্বংস করা যায়। তবে সেটি যারা করে তারা সাময়িক বিজয় লাভ করলেও যে কোনো মুহুর্তে মিথ্যার পতন হবে, এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। মনে রাখতে হবে যে, মিথ্যার সুরম্য প্রাচীর যদি শক্ত কনক্রীটের চেয়েও শক্তিশালী হয়, তবুও সে প্রাচীর তুলে দিয়ে ধ্রুব তারার ন্যায় জলজ্যান্ত সত্যকে কখনো ব্যাকস্পেসে আড়াল করা যায় না। সত্য উদ্ভাসিত ও দীপ্তিময় হয় তার নিজস্ব আলোর ঝলকানিতে।একথা মনে রাখা জরুরি যে, সত্য সমাগত হবেই, মিথ্যা অপসৃত হতে বাধ্য এবং সত্যের বিজয় অনিবার্যভাবে সংঘটিত হবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন, “সত্য সমাগম মিথ্যা অপসৃত এবং মিথ্যার পতন অবশ্যম্ভাবী”। পবিত্র কুরআনের এ মহান বাণী যুগে যুগে অসংখ্য ধারায় বাস্তবায়িত হয়েছে।সত্যকে কখনো নিশ্চিহ্ন করা যায়নি। সত্যকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার দাবার গুটি বানিয়ে বিশ্বের বিখ্যাত মুসলিম মনীষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে ফাঁসি দিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে।একইভাবে মিথ্যার বেসাতি বানিয়ে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বীরপুরুষ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ গবেষক এবং বুদ্ধিজীবী জামায়াতে ইসলামীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটাফর জেনারেল সাংবাদিক নেতা শিক্ষাবিদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে। স্মরণকালের সেরা ফ্যাসিস্ট পতিত শেখ হাসিনার সরকার যুদ্ধাপরাধী নাটক সাজিয়ে ফাঁসি দিলেও শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা আজ বিশ্বের ইসলাম প্রিয় মানুষের নিকট স্মরণীয় হয়ে আছেন। শত কোটি মানুষের প্রাণে; ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গকারী এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন তিনি। যা সত্য প্রেমীদের হৃদয় থেকে কখনো মুছে ফেলা যাবেন না। বরং তরুণ সমাজসহ সবার মাঝে আলোর পথের দিশারীর ন্যায় প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন যুগ থেকে যুগান্তর পর্যন্ত।

জন্ম ও শিক্ষা : শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা ১৯৪৮ সালের ২ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলাস্থ সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গী নামক গ্রামে নিজ মাতুলালয়ে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সানাউল্লাহ মোল্লা ও মাতার নাম বাহেরুন্নেসা বেগম। আব্দুল কাদের মোল্লা ছিলেন নয় ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। তার জন্মের কিছুকাল পরে তার পিতা-মাতা সদরপুরের আমিরাবাদ গ্রামে এসে বাড়ি করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

প্রাথমিক শিক্ষা : তিনি মেধাবী একজন ছাত্র হিসেবে ১৯৫৯ ও ১৯৬১ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে আমিরাবাদ ফজলুল হক ইনিষ্টিটিউট থেকে প্রথম শ্রেণিতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হন। ফরিদপুরের বিখ্যাত রাজেন্দ্র কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে ১৯৬৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর ১৯৬৮ সালে তিনি একই কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করেন। প্রবল আর্থিক সংকটের কারণে তিনি ফরিদপুরের শিব সুন্দরী একাডেমি নামক একটি স্কুলে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন।

উচ্চশিক্ষা : ১৯৬৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে এমএসসি করার জন্যে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কারণে ১৯৭১ সালে মাস্টার্স পরীক্ষা না হওয়ায় তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরবর্তীতে তিনি ১৯৭২ এর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। যুদ্ধের সময় প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আরো অনেকের মত আবদুল কাদের মোল্লার লেখাপড়াতেও “ছন্দ পতন ঘটে যায়। ১৯৭৪ সালে তিনি পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন এন্ড রিসার্চ বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৭৫ সালে তিনি শিক্ষা প্রশাসনের ডিপ্লোমায় অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরে আবার ১৯৭৭ সালে শিক্ষা প্রশাসন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। শিক্ষা জীবনে এটি তাঁর গৌরবময় অর্জন।

কর্মময় জীবন : আব্দুল কাদের মোল্লা ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঢাকার বিখ্যাত বিদ্যাপীঠ উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। এমএড পরীক্ষার রেজাল্টের পরে তিনি বাংলাদেশ রাইফেলস পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন এবং পরে তিনি একই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এ সংস্কৃতি কর্মকর্তা হিসাবে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে রিসার্চ স্কলার হিসাবে বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারে যোগ দেন। গৌরবময় সাফল্যের ধারাবহিকতায় ১৯৮১ সালে ‘দৈনিক সংগ্রাম’ পত্রিকায় সাব-এডিটর পদে যোগদান করেন তিনি। শিক্ষকতা পেশায় যে সত্যের পরশ পেয়েছিলেন, তা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তিনি সাংবাদিকতার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন। অত্যন্ত অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এ সময়ে তাঁর ক্ষুরধার ও বস্তুনিষ্ঠ লেখা প্রকাশ হতে থাকে দেশের জাতীয় দৈনিকসমূহে। “বীক্ষণ” ছদ্মনামে তার লেখা আর্টিকেল গুলো সচেতন পাঠক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে। সাংবাদিকতা পেশায় তাঁর অবদান অপরিসীম।

দাম্পত্য জীবন : আব্দুল কাদের মোল্লা দিনাজপুর নিবাসী বেগম সানোয়ার জাহানের সাথে ১৯৭৭ সালের ৮ অক্টোবর তারিখে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বেগম সানোয়ার জাহান ইডেন কলেজ থেকে পড়াশুনা করেছেন। তিনিও শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার মতো বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন ও ইডেন কলেজের ছাত্রী ইউনিয়নের জিএস ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বেগম সানোয়ার জাহান তার বাবার সাথে কুষ্টিয়াতে ছিলেন ও সক্রিয় ভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছিলেন। দুই পুত্র ও চার কন্যার সুখী সংসার তাদের। সব সন্তানই দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। পরিবারের সকলেই ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত। বেগম সানোয়ার জাহান জামায়াতের রুকন ও মহিলা বিভাগের একজন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল।

সাংবাদিকতা জীবন : শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা একজন নির্ভীক সাংবাদিক ছিলেন। বর্ণাঢ্য জীবনে গৌরবোজ্জল সময়টা অতিবাহিত করেছেন একজন স্বনামধন্য নির্ভীক সাংবাদিক হিসেবে। সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে যে প্রত্রিকাগুলো এক সময় গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে সর্বমহলের সুনাম, আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছিল তাদের মধ্যে ‘দৈনিক সংগ্রাম’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অসাধারণ যোগ্যতার ফলে শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য মনোনীত হন। ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে পরপর দু’বার তিনি ঐক্যবদ্ধ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সদা হাস্যোজ্জল এমানুষটি ছিলেন সাংবাদিক জগতের এক মানস-প্রাণ। তিনি ভ্রমরের ন্যায় মধু আহরণ করেছেন সাংবাদিক জগতে। তার রস-রসিকতায় ভরে ওঠে জাতীয় প্রেসক্লাবের আঙ্গিনা। তার ইক্ষু রসময় গল্পকথার সজীবতায় ভরে উঠতো গণমানুষের চেতনার প্রতীক জাতীয় প্রেসক্লাবের উঠান। আমার জানা মতে, “দৈনিক সংগ্রাম” অফিসের প্রতিটি দেয়াল, জানালা-দরজা, অগনন মানুষের বিচরণ, প্রতিটি ধুলিকণা এখনো যেন বহন করে আছে শহীদ কাদের মোল্লার অবিস্মরণীয় স্মৃতি। যা সোনা-দানা নয়, যেন ডায়মন্ডে বাঁধায় করা চিরন্তন স্থাপত্য।

রাজনৈতিক জীবন : শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার রয়েছে সংগ্রামী বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ইথিক্যাল ক্যারিয়ার। অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়ন কালেই তিনি কম্যূনিজমের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি এ সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকার পর মাওলানা মওদূদী (রহি:) এর রচিত বিশ্ববিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফহীমুল কুরআনের হৃদয়স্পর্শী ছোঁয়ায় তিনি ইসলামের প্রতি প্রবলভাবে আকৃষ্ট হন এবং আলোকিত জীবনের অনুসন্ধান পেয়ে ছাত্র ইউনিয়ন ছেড়ে ছাত্রসংঘের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান শাখায় যোগদান করেন। ১৯৭০ সালে তিনি এ সংগঠনের সর্বচ্চ স্তর সদস্য হন। ড. শহীদুল্লাহ হল শাখার সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি, ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি ও একই সাথে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সাথে। ছাত্রজীবন শেষ করার পর তিনি বৃহত্তর ইসলামী সংগঠন জামায়াতে যোগ দেয়ার পরে ১৯৭৯ সালের মে মাসে জামায়াতের রুকন হন। তিনি অধ্যাপক গোলাম আযমের ব্যক্তিগত সেক্রেটারি এবং ঢাকা মহানগরীর শূরা সদস্য ও কর্মপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে অল্পদিনের ব্যাবধানেই জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য হন। ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি, ১৯৮৬ সালে নায়েবে আমীর, ১৯৮৭ সালে ভারপ্রাপ্ত আমীর এবং ১৯৮৮ সালে ঢাকা মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন, যা বাতিলের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে তিনি জামায়াতের প্রধান নির্বাচনি মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও ২০০০ সালে এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২০০৪ সালের মার্চ মাসে স্বল্প সময়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি জামায়াতের প্রতিনিধি হিসেবে লিয়াঁজো কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়া চার দলীয় জোটের লিয়াঁজো কমিটিতে দায়িত্ব পালন করার কারণে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের সিনিয়র নেত্রীবৃন্দের সাথে আন্দোলনের নীতি নির্ধারণী সভায় মিলিত হতেন তিনি।

জেল জীবন : শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে বিভিন্ন মেয়াদে চার চারবার জেলে যেতে হয়। আইয়ুব সরকারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের দায়ে ১৯৬৪ সালে প্রথম বারের মত তিনি বাম রাজনীতিক হিসেবে গ্রেপ্তার হন। ১৯৭১ সালে তিনি আবার গ্রেপ্তার হন। এরশাদের শাসনের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের কারণে আবারও আটক করে রাখা হয় ১৯৮৫ সালের ২২শে এপ্রিল থেকে ১৪ই অগাস্ট পর্যন্ত। এরপর ১৯৯৬ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি গ্রেফতার হন। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার কূটনীতিকদের সাথে ছিল গভীর সম্পর্ক। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাপান, সিঙ্গাপুর, পাকিস্তান, তুরস্ক ও ভারতসহ বহু দেশ সফর করেছেন। তিনি বাদশাহ ফয়সাল ইন্সটিটিউট, ইসলামিক এডুকেশন সোসাইটি ও এর স্কুল, সাইয়্যেদ আবুল আ’লা মওদূদী রিসার্চ একাডেমীসহ ঢাকার গুলশানের মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ছিলেন। কলাম লেখক হিসেবে তিনি ইত্তেফাক, সংগ্রাম, পালাবদল, মাসিক পৃথিবী, কলম ইত্যাদি এবং বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায়ও তার প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। এছাড়া বস্তুবাদ ও কমিউনিজমের ওপর তার বৈজ্ঞানিক সমালোচনা শিক্ষিত মহলে ব্যাপক সমাদৃত। আল্লামা ইকবালসহ তিনি বিভিন্ন বিখ্যাত লেখকদের লেখা গ্রন্থ পড়তেন ও গবেষণা করতেন। অবশেষে ২০১০ সালের ১৩ জুলাই ফ্যাসিবদী জালেম শেখ হাসিনা তাকে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে এবং পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে। ট্রাইবুনালের রায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয় এবং পরে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পূর্বেই তড়িঘড়ি করে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

এসব ঘটনা থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, বিচারের নামে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মাধ্যমে তিনি হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। মূলত সত্যকে আড়াল করে ফ্যাসিবাদী শাসক পলাতক শেখ হাসিনা কাদের মোল্লাকে হত্যার মাধ্যমে ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলনকে বাংলার জমিন থেকে নির্বাপিত করতে চেয়েছিল। কিন্তু একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার তাজা রক্তের বিনিময়ে এদেশে শীঘ্রই ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা কায়েম হবে-ইনশাআল্লাহ। যা লক্ষ প্রাণের গভীরে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে টিকে থাকবে।

লেখক : শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews