চীনের স্মার্টফোন বাজারে ফের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করল হুয়াওয়ে। অন্যদিকে, প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলও দেশটিতে আবার প্রবৃদ্ধির পথে ফিরতে পেরেছে।
এপ্রিল থেকে জুন এ তিনমাসে হুয়াওয়ে চীনে এক কোটি ২২ লাখ স্মার্টফোন বাজারজাত করেছে, সংখ্যাটি গত বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।
বাজারে সরবরাহ বাড়ায় কোম্পানিটির শেয়ার ১৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের পর এই প্রথম হুয়াওয়ে চীনের শেয়ার বাজারে শীর্ষে উঠল।
এদিকে একই সময়ে অ্যাপল চীনে এক কোটি এক লাখ স্মার্টফোন বাজারজাত করেছে যা আগের বছরের তুলনায় চার শতাংশ বেশি। অ্যাপল বর্তমানে চীনের বাজারে পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকার গণমাধ্যম সিএনবিসি।
প্রযুক্তি বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ক্যানালিস বলছে, ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের পর এই প্রথম অ্যাপল চীনে প্রবৃদ্ধি অর্জন করল।
এ সপ্তাহে অ্যাপলের ত্রৈমাসিক আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশের আগ মুহুর্তে চীনের বাজারের পরিসংখ্যানটি প্রকাশ পেল। বিনিয়োগকারীরা চীনে কোম্পানির পারফম্যান্সের দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখছেন। কুপারটিনোভিত্তিক এই জায়ান্টকে হুয়াওয়ে ও শাওমির মতো স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের তীব্র প্রতিযোগিতা ও নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
২০২৩ এর শেষ দিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে বিধ্বস্ত হওয়া স্মার্টফোন ব্যবসা থেকে হুয়াওয়ের উত্থান অ্যাপলের শেয়ার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
তবে চীনে অ্যাপলের আবার প্রবৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত।
ক্যানালিস বলছে, অ্যাপল কৌশলগতভাবে চীনে আইফোন ১৬ সিরিজের দাম সমন্বয় করেছে, যা প্রবৃদ্ধি আনতে সাহায্য করেছে। প্রান্তিক সময়ে চীনা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো আইফোন ১৬ মডেলে বড় ধরনের ডিসকাউন্ট দিয়েছে এবং অ্যাপল নিজেও কিছু আইফোন মডেলের ক্ষেত্রে ট্রেড-ইন মূল্য বাড়িয়েছে যেন ক্রেতারা ব্যবহার করা অ্যাপলের পণ্য বেশি দামে বিক্রি করে নতুন পণ্য কিনতে পারে।
তবে চলতি বছর এখন পর্যন্ত অ্যাপলের শেয়ারের দাম প্রায় সাড়ে ১৪ শতাংশ কমেছে। এর একটি বড় কারণ চীনের বাজারে অনিশ্চয়তা এবং ভূরাজনৈতিক চাপ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প অ্যাপলের উপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে সিইও টিম কুককে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এটি প্রায় অসম্ভব একটি পদক্ষেপ।
এদিকে, চীনের বাজারে প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। হুয়াওয়ে গত এক বছরে বেশ জোরেসোরে একের পর এক স্মার্টফোন উন্মোচন করেছে এবং নিজস্বভাবে তৈরি অপারেটিং সিস্টেম ‘হারমোনিওএস ৫’ বিভিন্ন ডিভাইসে চালু করতে শুরু করেছে। এ অপারেটিং সিস্টেমটিকে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপলের আইওএস-এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ক্যানালিসের বিশ্লেষক লুকাস ঝং বলেন, “এ উদ্যোগের ফলে হুয়াওয়ের নিজস্ব ইকোসিস্টেমের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এর ফলে হুয়াওয়ের তৈরি সিস্টেমের সাথে অন্যান্য ডিভাইসের মিলিয়ে কাজ করার সক্ষমতা এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার উপর বাড়তি চাপ পড়বে।”