৫০ হাজার টাকা ধার দেওয়াই যে কাল হবে জানতেন না হেপি বেগম। পাওনা টাকার জন্য চাপ দেওয়ায় হেপির কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মেয়েকে উদ্ধারে তৎপর হলে পরিবারের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। আদালত আর থানা পুলিশের কাছে ধর্ণা দিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে হেপির পরিবার। হেপি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের শিওরখাল- বড়জমাত গ্রামের আব্দুল হকের স্ত্রী।
মেয়েকে অপহরণ ও হুমকি-ধমকির ঘটনায় ২৭ মে বালাগঞ্জ থানায় হেপির দেওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসআই শাহ্ ফরিদ আহমদ ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করেন। হেপি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা আমাকে থানায় ডেকে পাঠালেও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তোফায়েল আহমদ সুহেল দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মামলা না নিতে পুলিশকে চাপ দেয়। এজন্য মামলার অগ্রগতি করেনি পুলিশ।
৩ জুন আদালতে করা হেপি বেগমের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৫ মার্চ শিওরখাল কদমতলা গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে কায়েস হেপির কাছ থেকে টাকা ধার নেন। টাকা ফেরত চাইলে ক্ষিপ্ত হন কায়েসের ভাই লিটন। ২৮ এপ্রিল হেপির মেয়ে খাদিজা বেগম হাবিবা সিলেট শহরে ক্লাস করার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। ওইদিন বিএনপি নেতা সুহেলের সেল্টারে লিটনসহ তার সহযোগীরা স্থানীয় মোরারবাজার থেকে হাবিবাকে অপহরণ করেন। এ মামলায় লিটনকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া, লিটনের ভাই কয়েস, সেজন, সাজন, বোন রিতা, হেলিমা, পশ্চিম হায়দরপুরের কামাল ও শিওরখাল বড়জমাত গ্রামের এমরানকে অভিযুক্ত করা হয়।
পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছে। কিন্তু দীর্ঘ বিলম্বে তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়ায় হতাশ হেপির পরিবার।
বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিগত ৫ মাসে তার পরিবারের ওপর হয়ে যাওয়া নির্যাতনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন হেপি বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে হেপির স্বামী আব্দুল হক অভিযোগ করে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহ ফরিদ আহমদ রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছেন। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কালক্ষেপণ করে এখনো তদন্ত প্রতিবেদন না পাঠানোয় আমরা ন্যায়বিচার পওয়া নিয়ে শঙ্কিত।
উপজেলা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক তোফায়েল আহমদ সুহেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সামাজিকভাবে আমাকে হেয় করতে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। কায়েস ও লিটন বলেন, সাজানো গল্প বানিয়ে অপপ্রচার করে আমাদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এসব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।