তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশ কিছু সহকারী শিক্ষককে স্ট্যান্ড রিলিজ করে ভিন্ন জেলায় বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে সহকর্মী ও নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম।
তিনি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বদলির আদেশের পর শিক্ষক নেতা আবুল কাশেম ফেসবুক লাইভে এসে সহকর্মী ও নিজের বদলি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন।
তিনি বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পাশের জেলা ও বিভাগে। আরো অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব, তবুও আন্দোলন থেকে সরে আসব না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে ৩৫০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই। নেতা হিসেবে বড় ঝড় তো আসবেই। আমি তা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছি। অনতিবিলম্বে আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সেজন্য যদি জেলেও যেতে হয় প্রস্তুত আছি।’
শিক্ষক নেতা আবুল কাশেম বলেন, ‘ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা আন্দোলন করছি। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে আমাদের আন্দোলন নয়। কেউ আমাদের ভুল বুঝবেন না। কৌশলগত কারণে ঢাকা থেকে আন্দোলন বিদ্যালয় পর্যায়ে আনা হয়। কেউ যেন এটাকে ভিন্ন খাতে নিতে না পারে। কর্মসূচির মধ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া হবে। তারপর কঠোর কর্মসূচি নেয়া হবে। দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরব।’
এ ছাড়া শিক্ষকদের বদলির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়।
জানা গেছে, ময়মনসিংহ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক নেতাকে বরিশাল ও জামালপুরে বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে আন্দোলনের আহ্বায়ক আবুল কাশেমকে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও হালুয়াঘাট উপজেলার মো: রোকনুজ্জামান রাসেলকে বদলি করা হয়েছে জামালপুর সদর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় অধিদফতর থেকে শিক্ষকদের বদলি করা হয়েছে। আমাদের করার কিছু নেই।’