মন্থর উইকেটে রান তোলা কিছুটা দুষ্কর- সেটা বোঝা গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসেই। একটা সময় মনে হচ্ছিলো সফরকারীদের দেড়শোর ভেতর আটকে রাখতে পারবে বাংলাদেশ। শাই হোপ ছাড়া কেউই ঠিক দ্রুত আনতে পারছিলেন না রান। তবে শেষ দুই ওভারে পুষিয়ে দিয়েছেন শততম ম্যাচ খেলতে নামা রভম্যান পাওয়েল। তাতে সাগরিকায় লড়াকু সংগ্রহই পায় সফরকারীরা। গতকাল চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে ১৬৫ রান করে ক্যারিবিয়ানরা। কঠিন এই উইকেটে পাওয়েলের মতো কারো একজনের খুব করে প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। তবে আশা জাগিয়েও সেই কাজটি করতে পারেননি তানজিদ তামিম, সাইফ হাসানদের কেউই। শেষদিকে তানজিম সাকিব, নাসুম আহমেদরা চেষ্টা করলেও হিসেব মেলাতে পারেননি। তাতে যা হবার তাই হয়েছে। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৬ রানের ব্যবধানে হেরে গেছে লিটন কুমার দাসের দল। তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

চট্টগ্রামের মাটি বরাবরই রানপ্রসবা। আগের দিন সেন্টার উইকেট দেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোচ ড্যারেন স্যামির হাসিটাই ছিল তার প্রমাণ। তবে তাতে তৃপ্ত না হয়ে টস জিতে এদিন ব্যাট করতে নেমে সতর্ক শুরু করে ক্যারিবিয়ানরা। পাওয়ার প্লেতে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেনি তাদের ওপেনিং জুটি। বাংলাদেশও পারেনি উইকেট ফেলতে। পাওয়ার প্লের পর নবম ওভারে প্রথম আঘাত হানেন রিশাদ হোসেন। রিভার্স সুইপের চেষ্টায় রিশাদের বলে এলবিডব্লিউতে কাটা পড়েন আলিক আথানেজ। ২৭ বলে তিনি করেন ৩৪ রান। ব্র্যান্ডন কিং ডানা মেলতে পারছিলেন না। আড়ষ্ট থাকা এই ওপেনার ৩৬ বল খুইয়ে ৩৩ রান করে সহজ ক্যাচে বিদায় নেন। শেরফাইন রাদারফোর্ড প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলে বিপাকে পড়ে সফরকারী দল।

এরপর জুটি বাঁধেন দুই অভিজ্ঞ পাওয়েল ও হোপ। শুরুতে রানের চাকায় গতি আনতে পারছিলেন না পাওয়েল। হোপ একা টানছিলেন দলকে। এক পর্যায়ে ২১ বলে ১৬ রান ছিলো পাওয়েলের সংগ্রহ। এরপর শেষ দিকে টানা চারটি ছক্কা মেরে দেন যিনি। যার তিনটাই মারেন তানজিম হাসান সাকিবের বলে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৪৬ বলে ৮৩ রান যোগ করে ট্রিকি উইকেটে ভালো সংগ্রহ পেয়ে যায় তারা। ২৮ বলে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন হোপ। ২৮ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন পাওয়েল। ক্যারিবিয়ারনদের পতন হওয়া তিন উইকেটের দুটিই তাসকিন আহমেদের ঝুলিতে, সেটিও ব্যক-টু-ব্যাক। অপর শিকারি সেই রিশাদ।

প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতে সিরিজে এগিয়ে যেতে চাইলে বাংলাদেশকে করতে হতো ১৬৬ রান। কাকতালীয়ভাবে সাগরিকায় টি-টোয়েন্টিতে পরে ব্যাট করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চও ১৬৬! সেটা ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তবে সেই ম্যাচে ২ রানে হেরে গিয়েছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন দল। এই মাঠে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটা ইংল্যান্ডের (১৯০)। এই মাঠে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ১৫৭ রান তাড়া করে জিতেছে, ২০২৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই।

নিজেদের রেকর্ড গড়ে দলকে জেতাতে ঝড় তোলার আভাস দিয়েছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে ২ চার ও ১ ছক্কায় বলে ১৫ রান করা এই ওপেনারকে জেডেন সিলস। যদিও পুরো কৃতিত্ব রোমারিও শেফার্ডের। অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়েছেন এই ক্যারিবিয়ান। সেই ধাক্কা সামাল দিতে দ্বিতীয় ওভারেই ব্যাটিংয়ে নেমেছেন লিটন কুমার দাস। ফেরার ম্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়ক। আকিল হোসেনের বলে তাঁকেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ এই কিপার-ব্যাটার। তখনও বাকি ছিল দুর্দশার। পাওয়ার প্লেতে টানা দুই উএেকট পতনের পর যে নিবেদন নিয়ে ব্যাট করার প্রয়োজন ছিল তা দেখাতে ব্যর্থ সাইফও। আকিল হোসেন ফুল লেংথের বলটাকে সরে সুইপ করেছিলেন মারকুটে এই ব্যাটার। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় করে শর্ট ফাইন লেগে সেই শেফার্ডের মুঠোবন্দী হন তিনিও।

পাওয়ারপ্লেতে কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ম্যাচ দ্রুতই প্রতিপক্ষের হাতে তুলে দেবে- বাংলাদেশের সমর্থকেরা এমন দৃশ্য দেখে দেখে অভ্যস্ত। চট্টগ্রামেও সেই দৃশ্যের অবতারণা। এবার জেসন হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে গেলেন শামীম হোসেন (৪ বলে ১ রান)। সেই ধাক্কা সামাল দেবার আগেই ফের আরেক ধাক্কা। এবার খারি পিয়েরের বলে বোল্ড হলেন নুরুল হাসান সোহান (১০ বলে ৫ রান)। পিয়েরের গুড লেংথের বলটা নিচু এসেছিল। সেটিকে তিন স্টাম্প থেকে সরে গিয়ে কাট করতে চেয়েছিলেন নুরুল। কিন্তু বল ব্যাটের কিনারায় লেগে আঘাত করে অফ স্টাম্পে। পরে কিছুটা চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি সাকিব, নাসুম, তাসকিন, মুস্তাফিজরা।

আগামীকাল একই ভেন্যুতে হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews