আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে বৃহত্তর সুন্নী জোট ঘোষণা দিয়েছে যে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি তারা কোনোভাবেই সমর্থন করে না। জোটের শীর্ষ নেতারা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের বিকল্প কোনো গণভোট হতে পারে না, এবং গণভোটের ধারণা রাজনৈতিক বিভ্রান্তি তৈরি করার কৌশল। এ উদ্যোগকে তারা ‘রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যায়িত করেন।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের লালদিঘিতে আয়োজিত এক জনসভায় বৃহত্তর সুন্নী জোটের শীর্ষ নেতারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, একটি গোষ্ঠী ঘনঘন গণভোটের কথা তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং নির্বাচন প্রশ্নে অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। বক্তাদের ভাষায়, ১৮ কোটি জনগণ জানতে চায়—গণভোট বলতে তারা কী বোঝে? কিসের ওপর গণভোট? এ দাবি করার সাহস তারা কোথা থেকে পায়? গণভোট না দিলে নির্বাচন হবে না এই সাহস আপনারা কোথা থেকে পেলেন?
ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। তাদের দাবি, এ সুযোগে একটি চক্র গণভোটের নামে নির্বাচনকে বানচাল করতে তৎপর। বক্তারা তীব্র ভাষায় প্রশ্ন তোলেন, পিয়ার সিস্টেম চালু করতে হবে—এ কিসের কথা? পিয়ার কি কোনো ট্যাবলেটের নাম? এদেশের মানুষ তা জানে না।
তারা রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি করেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে দেশ গভীর হুমকির মুখে পড়বে। তারা বৃহত্তর সুন্নী জোটের ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের সংকটময় মুহূর্তে এ ঐক্যই জাতিকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম।
নেতারা জানান, জাতীয় সংকট মোকাবেলায় তারা আগে থেকেই ১৩ দফা ঘোষণা করেছেন এবং তা বাস্তবায়ন জরুরি। তারা অভিযোগ করেন, নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি করা গোষ্ঠী ঘণ্টায় ঘণ্টায় মত বদলায়, এবং কোনোভাবে গণভোট করতে পারলে তারা নির্বাচনের প্রয়োজন নেই বলে ঘোষণা দিতে পারে।
সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যুতে সুন্নি জোটের নেতারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের’ আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। দেশের এক ইঞ্চি জমিও কাউকে নিতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার যে অভিযোগ তারা উত্থাপন করেন, সেটিকে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য ‘বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেন। বক্তাদের দাবি, বন্দর নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়া উচিত।