১৪ বছর পর (২০০৯-২০১০ মৌসুমে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন) আবার শিরোপা জয়ের হাতছানি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর সঙ্গে সমান (১১ ম্যাচে ৯ জয় ও ২ পরাজয়ে ১৮) পয়েন্ট পেয়ে যৌথভাবে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে। আর হেড টু হেডে আবাহনীকে হারানোর সুবাদে এক নম্বর হয়েই সুপার লিগ শুরু করতে যাচ্ছে মোহামেডান। কিন্তু হায়! প্রিমিয়ার ক্রিকেটের এবারের সুপার লিগে রীতিমত ‘হ-য-ব-র-ল অবস্থা’ সাদাকালোদের।

প্রথম একাদশের সাতজন নেই। নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল হার্ট অ্যাটাকের পর বিশ্রামে। ফাস্টবোলার তাসকিন আহমেদের গোড়ালিতে ইনজুরি। তামিম ইকবালের জায়গায় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হওয়া তাওহিদ হৃদয় আম্পায়ারের সঙ্গে অসৌজন্যতামূলক আচরণে নিষিদ্ধ।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট দলে ডাক পাওয়া মুশফিকুর রহিম, উইকেটকিপার কাম টপঅর্ডার মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ আর বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামও নেই।

সব মিলে একাদশ সাজানোই দায় মোহামেডানের। এটা কি ভাগ্যের বিড়ম্বনা? নাকি টিম ম্যানেজমেন্টের অদক্ষতা-অদূরদর্শিতা? মোহামেডান সমর্থকদের মনে ঘুরেফিরে সেই প্রশ্নই উঁকি দিচ্ছে।

ভাইটাল প্লেয়ার মুশফিক, মিরাজ, তাসকিন, মিরাজ, তাইজুল ও অঙ্কন সুপার লিগ খেলতে পারবেন না; সেটা আগেই জানা ছিল। তাদের বিকল্প হিসেবে অন্তত ৩-৪ জন কোয়ালিটি অপশন, না হয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলা কয়েকজন সম্ভাবনাময় যুবাকে রেখে দল সাজানো দরকার ছিল। তাহলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেতো। কিন্তু মোহামেডান টিম ম্যানেজমেন্ট তা করেনি। তাই সুপার লিগ শুরুর আগে মোহামেডান শিবিরে চরম বেসামাল অবস্থা।

বাধ্য হয়েই ক'জন বাড়তি ক্রিকেটারের দিকে হাত বাড়ানো। সে ক্রিকেটারইবা কোথায় মিলবে? চরম বিপদে পড়ে গিয়েছেন মোহামেডান কর্তারা। এদিকে-ওদিক হাতরে অবশেষে ৪ জনকে দলে নেওয়ার কাজ সেরেছেন তারা।

এর মধ্যে একজনের কথা সবার জানা। তিনি মোস্তাফিজুর রহমান। কাটার মাস্টার মোহামেডানের হয়ে খেলবেন, গতকালই জানা হয়েছে সে খবর। মঙ্গলবার বাকি ৩ ক্রিকেটারের খোঁজে ব্যতিব্যস্ত সময় কেটেছে মোহামেডান কর্তাদের।

অবশেষে তারা ঠিক করেছেন সিলেটের মারকুটে ওপেনার তৌফিক তুষারকে। এবারের প্রিমিয়ার লিগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের নিবন্ধিত ক্রিকেটার তৌফিক তুষার। কিন্তু টিম কম্বিনেশনের কারণে রবিন লিগে এক ম্যাচেও সুযোগ পাননি।

ঘুরে ফিরে তানজিদ তামিম আর সাইফ হাসান ওপেন করেছেন। আর তিনে খেলেছেন সৌম্য সরকার। সুপার লিগেও খেলবেন, সে নিশ্চয়তা নেই। তাই লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের সঙ্গে সমঝোতায় তুষারকে মিচ্যুয়্যাল ক্লিয়ারেন্সে নেওয়ার সুযোগ ছিল। সেই সুযোগে তাকে দলে টেনেছে মোহামেডান।

এর বাইরে মোহামেডান আরও পেয়েছে মিডল অর্ডার কাম অফস্পিনার ফরহাদ হোসেন এবং বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদকে। বলে রাখা ভালো, জাতীয় লিগে রাজশাহীর অন্যতম সেরা পারফরমার ফরহাদ ও নাবিল সামাদ এবারের প্রিমিয়ার লিগে কোনো দলে ছিলেন না।

নাবিল গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে সিলেট বিভাগের হয়ে জাতীয় লিগ ও এনসিএল টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। একইভাবে ফরহাদ হোসেনও রাজশাহীর পক্ষে জাতীয় দলের সর্বশেষ আসরে নিয়মিত খেলেছেন। এছাড়া রূপগঞ্জ টাইগার্সের হয়ে গত প্রিমিয়ার লিগেও অংশ নিয়েছেন ফরহাদ।

একজন করে বাঁহাতি পেসার (মোস্তাফিজ), ওপেনার (তৌফিক তুষার), বাঁহাতি স্পিনার (নাবিল সামাদ) ও অফস্পিনিং অলরাউন্ডার (ফরহাদ হোসেন) দলে ভিড়িয়েছে। তারপরও মোহামেডানের একাদশ সাজানো কঠিন হবে।

দলে আছেন দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও আনিসুল ইসলাম ইমন, আর ৩ প্রতিষ্ঠিত ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল ইসলাম ও আরিফুল হক। এছাড়া দুই পেসবোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার রনি, পেসার এবাদত হোসেন ও বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।

এই ১৩ জনের মধ্য থেকে ১১ জনকে বেছে নিতে হবে মোহামেডান ম্যানেজমেন্টকে। এই দল নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী, গাজী গ্রুপের সঙ্গে কতটা কুলিয়ে উঠতে পারবে; সেটাই প্রশ্ন।

দেখা যাক উপদেষ্টা কোচ মিজানুর রহমান বাবুল, ভারপ্রাপ্ত কোচিং স্টাফ জাহাঙ্গীর আলম, আনোয়ার হোসেন, গোলাম মুর্তজা আর ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ শিপনরা মিলে কোন ছকে একাদশ সাজান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার শেরে বাংলায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে কোন ১১ জন খেলেন সাদা কালোর হয়ে, সেটি নিয়েই এখন বড় আগ্রহ মোহামেডান সমর্থকদের।

এআরবি/এমএমআর/জিকেএস



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews