ফাতিমা রশীদের বয়স তখন ২৯ বছর। হঠাৎই তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে। এমনটা কেন হলো, বুঝতে পারলেন না। ওজন নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করেন, মেপে খাওয়াদাওয়া করেন, নানা ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত। তাহলে উচ্চ রক্তচাপ কেন হলো? 'কারণ খুঁজে না পেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা শুরু করলাম। জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনতে হলো। এই করে করেই দিন কাটতে থাকল,' বলছিলেন ফাতিমা।
বছর চারেক পর শারীরিক জটিলতা নিয়ে একদিন চিকিৎসকের কাছে যেতে হলো। সব পরীক্ষার পর চিকিৎসক দুটি খবর দিলেন, একটা সুসংবাদ, আরেকটা দুঃসংবাদ। 'তুমি আট সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা,' জানানোর পর বললেন, 'তোমার কিডনি ফেইলিউর। স্টেজ ৩বি।'
মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। অনাগত সন্তানের কথা ভেবে অস্থির হয়ে পড়লেন ফাতিমা। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের কারণটাও এত দিনে বুঝতে পারলেন। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ ও শর্করার কারণে ধীরে ধীরে কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়ে। তাঁর ক্ষেত্রে বিষয়টাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে ছোটবেলায় কিডনিতে জমা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথর। এগুলো স্কার টিস্যু হয়ে কিডনির ক্ষতি করেছে। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের এমন পর্যায়ে দৈনন্দিন অনেক বিষয়ে নিয়ম মেনে চলতে হয়। সেটাই শুরু করলেন ফাতিমা।
এর মধ্যেই তাঁর একলাম্পসিয়া (গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে খিঁচুনি) হয়ে গেল। তাঁর স্বামী বেলজিয়ামের মানুষ। তবে কাজের সূত্রে স্পেনে থাকেন তাঁর শাশুড়ি। ২০১৪ সালে চিকিৎসকের পরামর্শে সন্তান জন্ম দিতে স্পেনে চলে গেলেন ফাতিমা, 'সে বছরই আমার প্রিম্যাচিউর বেবি (অপরিণত শিশু) হলো। অপরিণত হলেও ওর স্বাস্থ্যগত জটিলতা ছিল না। মা হিসেবে শুরু হলো আমার নতুন জীবন।'