অন্যান্য বড় প্রযুক্তি কোম্পানির জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে মেটার এ চুক্তি। ছবি: রয়টার্স

অন্যান্য বড় প্রযুক্তি কোম্পানির জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে মেটার এ চুক্তি। ছবি: রয়টার্স

আগামী ২০ বছর ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ও ডেটা সেন্টার চালানোর জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারমাণবিক এক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মার্কিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট মেটা।

মঙ্গলবার কোম্পানিটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের এক বিদ্যুৎ কোম্পানির একটি পারমাণবিক চুল্লি আগামী ২০ বছর চালু রাখতে এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তারা।

‘কনস্টেলেশন এনার্জি’র সঙ্গে মেটার এ চুক্তি কোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে তাদের প্রথম চুক্তি। যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ায়, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ও ডেটা সেন্টারের কারণে বড় বড় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ান।

এরইমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার এক বিদ্যুৎ কোম্পানির তৈরি ছয়টি ছোট পারমাণবিক চুল্লির মাধ্যমে নিজেদের বিভিন্ন ডেটা সেন্টারের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের চুক্তি করেছে সার্চ জায়ান্ট গুগল।

একইরকম চুক্তি করেছে মার্কিন সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটও, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনার স্থান ‘থ্রি মাইল আইল্যান্ড’-এর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আবার চালু হবে।

ইলিনয় অঙ্গরাজ্য এখন ‘কনস্টেলেশন এনার্জি’র বিদ্যুৎকেন্দ্র ‘ক্লিনটন ক্লিন এনার্জি সেন্টার’কে আর্থিকভাবে সহায়তা করছে, যাতে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারে তারা। আর এই অর্থ আসছে সাধারণ মানুষের বিদ্যুৎ বিল থেকে এবং এ ভর্তুকি মিলছে বিশেষ এক সরকারি প্রোগ্রামের মাধ্যমে, যার নাম ‘জিরো-ইমিশনস ক্রেডিট’।

তবে এ সহায়তা ২০২৭ সালে শেষ হয়ে যাবে। এরপর মেটার এই ‘পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট’ বা বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি ওই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে চালু রাখতে, লাইসেন্স নবায়ন ও পরিচালনার খরচ দেবে। ঠিক কি পরিমাণ অর্থ মেটা দেবে তা এখনও প্রকাশ করেনি তারা।

এ চুক্তির মাধ্যমে ‘কনস্টেলেশন’ কোম্পানি তাদের ‘ক্লিনটন’ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ৩০ মেগাওয়াট বাড়াতে পারবে। বর্তমানে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট উৎপাদন সক্ষমতা এক হাজার একশ ২১ মেগাওয়াট, যা প্রায় ৮ লাখ মার্কিন বাড়ির মোট বিদ্যুৎ চাহিদার সমান।

ক্লিনটন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১৯৮৭ সালে চালু হয় এবং গত বছর ‘কনস্টেলেশন’ মার্কিন পারমাণবিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা এনআরসি’র কাছে লাইসেন্স ২০৪৭ সাল পর্যন্ত নবায়নের আবেদন করেছে।

গার্ডিয়ান লিখেছে, অন্যান্য বড় প্রযুক্তি কোম্পানির জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে এ চুক্তি, যেখানে পুরনো বিভিন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করতে পারে তারা। পাশাপাশি নিজেদের ডেটা সেন্টার চালাতেও নতুন পারমাণবিক ও অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎস ব্যবহারের পরিকল্পনাও করতে পারে।

মেটার ‘গ্লোবাল এনার্জি’ বিভাগের প্রধান উরভি পারেখ বলেছেন, “বিভিন্ন বিদ্যুৎ কোম্পানির কাছ থেকে আমরা যে বিষয়টি খুব স্পষ্টভাবে শুনতে পাই তা হচ্ছে, তারা নিশ্চিত হতে চাইছে, বর্তমানে চালু বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র ভবিষ্যতেও যেন চালু থাকে।”

‘কনস্টেলেশন’-এর সিইও জো ডোমিঙ্গেজ বলেছেন, “আমরা কেবল ইলিনয়ের জন্য নয়, বরং দেশের বিভিন্ন জায়গার গ্রাহকদের সঙ্গেও এ ধরনের আলোচনা করছি, যাতে তারাও মেটার মতো এগিয়ে আসে।

“প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করতে ও সেগুলো চালু রাখতে আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে মেটা এই আর্থিক সহায়তা।”



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews