শেষ হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিত হওয়া এই নির্বাচন সংবাদ শিরোনামে এসেছে ফলাফলের আগাম আয়োজন, গণনাবিলম্ব, ভোটবর্জন ও নানা অভিযোগ উঠার কারণে। নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নিরঙ্কুশভাবে জয়ী হয়েছে। কিন্তু জয়-পরাভবের বাইরে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং তার পরিণতি নিয়ে যে আলোচনা এবং ক্ষোভ তাতেই আসল শিক্ষা লুকিয়ে আছে। নির্বাচনের গণনায় দীর্ঘসময় নেওয়া, কোনো কোনো প্যানেলের অভিযোগ ও বর্জন, প্রশাসন ও কমিশনকে পক্ষপাতের অভিযোগÑ এসবই মিলেমিশে গড়ে তুলেছে অনিশ্চয়তা ও অসন্তোষের পরিবেশ। গণনার ধীরগতি ও বারবার সময়সূচি বদলের খবরও নির্বাচনী অবকাঠামোর দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করেছে।

গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণে বিশৃঙ্খলার মূল কারণগুলোর আলোকে সংশ্লিষ্টদের বাস্তব আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন।

প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্ররাজনীতিকে দলীয় রাজনীতির লেজুড়ে পরিণত করা কখনোই কাম্য হতে পারে না। ক্যাম্পাসগুলো হওয়ার কথা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সম্পর্কে জানা, বোঝা ও চর্চার ক্ষেত্র, যেখানে শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমতসহিঞ্চুতা, সমযোতা ও সহযোগিতার হাতেকলমে শিক্ষা নেবে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে কাজ করে। শিক্ষার্থীদের ছাত্ররাজনীতির নামে দলীয় দাসে রূপান্তরিত করার সংস্কৃতি থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। শিক্ষাঙ্গনগুলোকে মুক্তি দিত হবে গুরুতর রাজনৈতিকায়ন থেকে। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকা ছাত্রসংসদগুলোতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ছাত্রসংগঠনের পুনরাগমন বা সক্রিয়তা, অন্যান্য ছাত্রসংগঠনগুলোর সাথে পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং রাজনীতিকরণকৃত দলীয় গোষ্ঠীবদ্ধতা ক্যাম্পাসের ছাত্রসমাজকে ভাগ করে দেয় ও সহাবস্থানের পরিবেশ বিনষ্ট করে; ফলে ছাত্রসংসদের নির্বাচনী প্রতিযোগিতা সহজেই সাংগঠনিক সংঘর্ষে রূপ নেয়। নানা রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সক্রিয়তার খবর মিলে এই পটভূমিতেই। তাই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে ছাত্রসংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জাতীয় জীবনে এত উত্তেজনা বিরাজ করছে। জাতীয় রাজনীতির লেজুড়বিহীন ছাত্রসংগঠন হলে, ক্যাম্পাসের নির্বাচনগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর এত মাথাব্যাথার কারণ হতো না।

দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণহীন বা দুর্বল নির্বাচনী পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা। ছাত্রসংসদ নির্বাচনে কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতিতে যথেষ্ট গাফিলতি থাকায় প্রতিটি বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, স্বচ্ছ, সময়মত ও নিরপেক্ষ গণনা-প্রক্রিয়া না থাকলে নিরপেক্ষতা নিয়ে নানা বিদ্যমান সন্দেহ দ্রুত বাড়ে; অনেকে ফলপ্রকাশে অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুললে সেটি বিতর্ক, হট্টগোল ও সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। জাকসুর নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা তাই দেখেছি; গণনার বিলম্ব ও বিভিন্ন পক্ষের ভোটবর্জনও কিন্তু একই সূত্র থেকে উদ্ভূত।

তৃতীয়ত, বর্তমান প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারি প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ লক্ষণীয়। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বাহিনী নিয়োগ বা তাদের কাজ-প্রণালী যদি অস্পষ্ট বা কঠোরতার দিকে ঝুঁকে যায়, তা পরিস্থিতিকে ঘোলাটে ও সংঘর্ষ তীব্র করে; অপরদিকে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিও বাইরে থেকে অনুপ্রবেশ ও সহিংসতাকে উস্কে দিতে পারে। পুরনো উদাহরণগুলো দেখায় যে, ক্যাম্পাসে বহিরাগত লোকজনের উপস্থিতি চাপ বা জবরদস্তি বাড়ালে বিষয়টি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

চতুর্থত, সাম্প্রতিক ছাত্রসংসদ নির্বাচনে ছাত্রনেতৃত্ব ও প্রার্থীদের আচার-আচরণ ও কথাবার্তায় দায়বদ্ধতার ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনী সংস্কৃতির অংশ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি শালীনতা বজায় রাখা, বিশেষ ফায়দা নিতে বিশেষ ট্যাগিং না করা, কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলা এবং নির্বাচনে হারের পর ফলাফল মেনে নেওয়াÑ এসবের সংস্কৃতি মজবুত না হলে প্রতিযোগিতা তিক্ত হয়ে ওঠে, বিক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি হয় ও সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। তাই আমাদেরকে ভবিষ্যতে বিবেচনায়, পরিবর্তনের প্রত্যাশায় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলাকেই দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে দলের বা জোটের বাইরে থেকেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষোভ প্রকাশের ঘটনাগুলো এই দিকটি আমাদের কাছে স্পষ্ট করছে।

এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে ভবিষ্যতে কীভাবে ছাত্রসংসদ নির্বাচনে এ ধরনের হট্টগোল প্রতিরোধ করা যেতে পারে?

প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্বাচনের নামে অভিজ্ঞতার অভাবের অজুহাতে ‘অনুশীলন খেলায়’ নয়, নিয়মিত নির্বাচন আয়োজন করে ছাত্রসংসদগুলোকে সংবিধানগত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তর থেকে সর্বজনগ্রাহ্য নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও প্রফেশনাল নির্বাচন কমিশন গঠন এমনভাবে করা হোক যাদের সম্পর্কে কেউ কোনো পক্ষপাতের অভিযোগ তুলতে না পারে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা আগেই কমিশনের সদস্যদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও তাদেরকে নির্বাচন পরিকল্পনা সুযোগ করে দেওয়া। স্বাধীন পর্যবেক্ষক দল (যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশনের সদস্য, বিশিষ্ট নাগরিক, সংবিধিব্যবস্থার অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হতে পারে) নির্বাচন করা ও অভ্যন্তরীণ শিক্ষকম-লীর আরেকটি দল পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত করা দরকার; নির্বাচন পরিচালনার প্রতিটি ধাপ রেকর্ড ও প্রকাশ্য হওয়া দরকার, যাতে সন্দেহের সুযোগ না থাকে। এই ধরনের প্রস্তাব দেশের বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে উত্থাপিত অভিযোগগুলোকে দূর করা এবং প্রার্থী ও ভোটারসহ নানা অংশীজনের সংশয় কাটানোর জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমরা মনে করি।

দ্বিতীয়ত, আস্থাহীনতার বিপরীতে ভোটগ্রহণ ও গণনার পরিকল্পনায় নেতৃত্বে এবং প্রযুক্তিগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় সংস্কার জরুরি। ভোটার রেজিস্ট্রেশন, পরিচয় যাচাই, বুথ সিকিউরিটি, সিলযুক্ত ব্যালট বাক্স এবং গণনা প্রক্রিয়ার জন্য নির্দিষ্ট, অনমনীয় সময়সূচি পালনের মতো প্রটোকল অনুসরণ আবশ্যক। এ সব বিষয় স্বল্প ও মাঝারি মেয়াদে নির্বাচন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা গেলে ফলপ্রসূ হবে। যেখানে সম্ভব, প্রথম থেকে সবকিছু ডিজিটাল রেকর্ডিং করার ব্যবস্থা নেওয়া, ক্যামেরা দ্বারা গণনা সরাসরি দৃশ্যায়ন (প্রাইভেসির নীতিনৈতিকতার সীমা বজায় রেখে) সর্বাবস্থায় নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ও অবহিতকরণ নিশ্চিত করা এবং সন্দেহে উদ্রেক হলে প্রযুক্তির উপর অন্ধভাবে ভরসা না করে মানব-নির্ভর যাচাইকরণ বজায় রাখতে হবে। গণনা দেরি হলে অনিশ্চয়তা এবং জল্পনা বাড়ে; তাই নির্ধারিত সময়ে গণনা ও ফলপ্রকাশ নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

তৃতীয়ত, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে ছাত্রনেতাদের জন্য আচরণগত নীতিমালা প্রণয়ন ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। প্রার্থীর প্রতিশ্রুতিতে, নির্বাচনী ঘোষণাপত্রে একটি ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ সই করানো যেতে পারে। অন্যের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ, শক্তি বা ক্ষমতার অপব্যবহার, ভোট কেনাবেচা, কাউকে ধমক দেওয়া বা ট্যাগিং করা ইত্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষণা থাকবে এবং এসব বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিধান থাকবে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর, হেরে যাওয়া প্রার্থীদের আচরণ ও জবাবদিহিতা সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলে তিক্ততা কমবে এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা গ্রহণযোগ্য সীমার মধ্যে থাকবে।

চতুর্থত, ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব নিরাপত্তা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীসহ বাহ্যিক অনুপ্রবেশ রোধ, ছাত্রসংগঠনগুলোর মাঝে বৈরিতার অবস্থা ও মাত্রা নিরুপন এবং জরুরি পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় এককভাবে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে তার প্রস্তুতিÑ এসব ব্যাপারে পরিষ্কার নীতিমালা থাকা মানে প্রশাসনকে সরকারি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর অতিমাত্রা নির্ভরশীল হতে হবে না। নিরাপত্তা নীতিতে স্বচ্ছতা ও মানবাধিকারসম্মত পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ক্যাম্পাসে সবসময় সুরক্ষিত বোধ করে ও প্রয়োজনে প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারে। পুরনো সংঘর্ষের ইতিহাস ও সাম্প্রতিক উত্তপ্ত প্রতিক্রিয়া থেকে এই শিক্ষা আমাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

পঞ্চমত, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উদ্বোধনে ভোটার শিক্ষা ও সমন্বিত প্রক্রিয়ায় ছাত্রসংসদ নির্বাচনে শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া কেবল একটি ইভেন্ট নয়; এটি ছাত্রদের অধিকার প্রয়োগের ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অংশ। তাই নির্বাচনী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গঠনে ভোটারদের অধিকার, দায়িত্ব ও শান্তিপূর্ণ প্রতিযোগিতার মূল্যবোধ সম্পর্কে ধারাবাহিক পাঠ্যক্রম, ওয়ার্কশপ ও ডিবেট আয়োজন জরুরি। মেয়েদের নিরাপত্তা ও সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নানা পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ নিরাপদ পরিবেশ না থাকলে ভোটার উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ কমে যায় এবং ফলের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সংবাদ বিশ্লেষণে একই আশঙ্কা উঠে এসেছে যে পুরনো সামাজিক ধারণা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন অনেককেই নির্বাচন থেকে দূরে রাখে; তাই এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।

যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি, তারা জাকসুর ঘটনায় যে শিক্ষা নিতে পারে তা প্রধাণত তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথমত, সময়মত প্রস্তুতি গ্রহণ। তার অংশ হিসেবে জরুরিভিত্তিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, স্বচ্ছ ভোট-প্রক্রিয়া নির্ধারণ ও গণনার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগ করা। দ্বিতীয়ত, অংশীদারিত্বমূলক বাইরের পর্যবেক্ষক ও আভ্যন্তরীণ তত্ত্বাবধায়ক দল নিয়োগ করা। সবশ্রেণীর অংশীজনদের প্রতিনিধিকে রেখে দল দুটো গঠন করা যাতে একপক্ষীয় অভিযোগ ওঠার সুযোগ কমে যায়। ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনমনে আস্থা তৈরি হবে। তৃতীয়ত, প্রচারণার সময় এবং গণনার সময় সুনির্দিষ্ট আইন ও নির্দেশিকায় বাধ্যতামূলক সম্মতি যাতে ভোটবর্জন বা গণনার বিলম্বে সংঘাতের সৃষ্টি না হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি প্রশাসনকে ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে অবশ্যই প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগের দিন থেকে শুরু করে নির্বাচনের পরের দিন পর্যন্ত (তিন দিন) বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাইরের লোকজনের আগমন নিষিদ্ধ রাখতে হবে। উপরোক্ত সব স্তরের সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করলে ভবিষ্যতে এমন হট্টগোলের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে।

জাকসু নির্বাচন কেবল একটি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় ঘটনাও বটে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, নৈতিক নেতৃত্ব, প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান এবং প্রশাসনের উপর আস্থা রাখার সংস্কৃতি গড়ে তোলা আবশ্যক। যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব অবকাঠামো ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে সহনশীল ও স্বচ্ছভাবে গড়ে তুলতে পারে এবং মূলধারার রাজনৈতিক প্রভাববলয়ের বাইরে থেকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তৈরির পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, তবে তা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বির্নিমাণে গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, রাজনৈতিক দর্শন ও কলাকৌশলের হাতেকলমে প্রশিক্ষণের কর্মশালায় রূপান্তরিত হতে পারে। তখন শিক্ষার্থীরা শুধু ভোটে অংশগ্রহণ করবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তাদের জন্য একটি শক্তিশালী, দায়িত্বশীল ও সংহত শিক্ষাজীবনের সম্ভাবনাও তৈরি হবে।

লেখক: ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য।
Email: [email protected]



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews